সিপিআর ট্রেনিংয়ে ঘরে ঘরে তৈরি হবে বিশেষজ্ঞ, বাঁচবে হাজারো প্রাণ: স্পিকার
অসংক্রামক ব্যাধি থেকে পরিত্রাণ পেতে সচেতনতা প্রয়োজন। হৃদরোগের কারণে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেলে কীভাবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সহযোগিতা করা যায়, আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রাণে বাঁচানো যায়, সে বিষয়ে মৌলিক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। জীবনযাপন পদ্ধতি পরিবর্তনের মাধ্যমে অসংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
আজ সোমবার বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে আইপিডিআই ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পার্লামেন্টারি স্ট্যাডিজের ( বিআইপিএস) যৌথ উদ্যোগে অসংক্রামক রোগ বিষয়ক সচেতনতা ও সিপিআর প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এবং গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা।
সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সেক্রেটারি কে.এম. আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে অসংক্রামক রোগ বিষয়ক আলোচনা ও প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন আইপিডিআই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের মূল বক্তা আইপিডিআই ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল ও প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. মহসীন আহমদ তার বক্তব্যে বলেন, ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন বাঁচানোর পেছনে সিপিআরের ভূমিকা অনস্বীকার্য। উন্নতবিশ্বে এই গুরুত্ব সঠিকভাবে উপলব্ধ হয়েছে বিধায় সেখানে সিপিআর প্রশিক্ষণের ব্যাপারে সচেতনতা সহজেই প্রতীয়মান হয়। অন্যদিকে আমাদের দেশে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং সিপিআর সম্পর্কে জনসাধারণের ধারণা না থাকায় এধরণের কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয় না। এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যেই আইপিডিআই ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে জীবন বাঁচায় সিপিআর, ঘরে ঘরে হোক এর ট্রেনিং সেন্টার এই অঙ্গীকার নিয়ে আমাদের আজকের এই কর্মশালার আয়োজন।’
ড.শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘সারা বিশ্বের অসংখ্য মানুষ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। একটু সচেতন হলেই সিপিআরের মাধ্যমে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাঁচানো সম্ভব। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেড়ে চলেছে। আমাদের দেশও এর ব্যতিক্রম নয়। আইপিডিআই ফাউন্ডেশনের এমন সময়োপযোগী উদ্যোগ দেশব্যাপী একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘যে কোন বিষয়ে সচেতনতাই হলো বড় প্রতিরোধ। দেশে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে প্রান্তিক পর্যায়ে সচেতনাতা পৌঁছাতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিশেষ করে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বিষয়ে সচেতনাতায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, ‘জনসাধারণনের মধ্যে অনেকেই জানেন জ্বরের প্রথমিক চিকিৎসা প্যারাসিটামল। একইভাবে হৃদরোগের ক্ষেত্রে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে কেউ আক্রান্ত হলে কী করনীয় তা জানা থাকলে জীবনের ঝুঁকি অনেক কমে আসবে।’
এ কর্মশালায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সকল সংসদ সদস্য, সংসদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রায় ২০০ জনকে সিপিআর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এমন একটি মহৎ উদ্যোগ হাতে নেওয়ায় আইপিডিআই ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সভাপতি কে.এম. আব্দুস সালাম অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
Source: https://dainikamadershomoy.com/details/018d843b49fa